| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল সরকার নাস্তিক্যবাদীদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে : চরমোনাই পীর 


শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

সরকার নাস্তিক্যবাদীদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে : চরমোনাই পীর 


রহমত নিউজ     10 November, 2022     03:03 PM    


প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, আপনি মসজিদ বানাচ্ছেন, এই মসজিদে নামাজ কারা পরবে, যদি ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকে। ইসলামবিরোধী অবস্থান থেকে সরে না আসলে দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। যাতে সরকারের পতন ত্বরান্বিত হবে। সরকার একদিকে থানায় থানায় দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করছে, অপরদিকে ধর্মীয় শিক্ষা পাবলিক পরীক্ষা থেকে বাদ দিয়ে জাতির সাথে ধোকাবাজি করছেন। ইসলামবিদ্বেষীদের নীল নকশা বাস্তবায়নে ধর্মী শিক্ষা বাদ দেয়ার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

আজ (১০ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত পাবলিক পরীক্ষায় ধর্ম শিক্ষা পূর্বের ন্যায় বহাল, শিক্ষা সিলেবাস থেকে ঈমান-আকিদা বিধ্বংসী অবৈজ্ঞানিক ডারউইনের বিবর্তনবাদ বাতিল এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিশাল গণমিছিল ও স্মারকলিপি পেশ পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চরমোনাই পীর বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে নাস্তিক ও ধর্মহীন বানাতে দিতে পারি না। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে আজানের সূরে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে, আজানের আওয়াজে ছেলে মেয়েরা ঘরে ফিরে যায়। এদেশে ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। দেশে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত চলছে। ডারইউনের বিবর্তনবাদ সম্পূর্ণ নাস্তিক্যবাদী মতবাদ, এ শিক্ষা কোনভাবেই মুসলমানের দেশে চলতে পারে না।মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাদ সত্বেও সরকার নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে এদেশের ধর্মপ্রাণ জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করবে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামী শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে, দেশবাসী তাদের আজীবনের জন্য প্রত্যাখান করবে।

সমাবেশ শেষে গণমিছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে রওয়ানা দিয়ে পল্টন মোড়, জিরোপয়েন্ট হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে গেলে পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিবের দফতরের কর্মকর্তা নাজমুল হক খানের হাতে একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যগণ হলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও কেএম আতিকুর রহমান। মিছিল সচিবালয় রোডে পৌঁছলেও মিছিলের বাকি অংশ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে থেকে যায়।

জমায়েতে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, শ্রমিকনেতা এইচ এম ছিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, মাওলানা আরফিুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম কবির, কেএম শরীয়াতুল্লাহ প্রমুখ। দলের প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

স্মারকলিপিতে ১০ দফা দাবী জানানো হয়। দাবীসমূহ হলো : ১. শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে, অভিজ্ঞ, দ্বীনদার আলেমদেরকে সম্পৃক্ত করা। ২.শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সকল পরীক্ষায় আবশ্যিক করা। ৩.ডারউইনের অপ্রমাণিত, ভ্রান্ত ও বিতর্কিত বিবর্তনবাদ শিক্ষার সকল স্তর থেকে বাদ দেওয়া। ৪.পাঠ্য পুস্তকের সকল বিষয় হতে অনৈসলামিক ও ইসলামী বিশ্বাস বিরোধী বিষয় ও শব্দসমূহ বাদ দেওয়া। ৫.ইসলাম ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ‘কুরআনুল কারীম’ শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা। ৬.মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম, শিক্ষানীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট আলেম, দ্বীনদার শিক্ষকদের দ্বারা পূনর্মাজন করা। ৭.নৈতিকতা সমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষে সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা। ৮.বাংলা, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাস বই হতে বিতর্কিত ও ইসলামী আকিদা বিরোধী প্রবন্ধসমুহ বাদ দেওয়া। ৯.স্কুল ও মাদরাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অপ্রয়োজনীয় এবং অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা। ১০. যেহেতু এদেশের সাধারণ জনগণই এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যয়ভারের সিংহভাগ বহন করেন, সেহেতু জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা ব্যবস্থা নয় বরং এদেশবাসীর ধর্মীয় চেতনার অনুকুল শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।